ঋতুকালীন অস্বাচ্ছন্দ্য দূর সেই সাথে চিন্তাহীন এবং স্বাধীন জীবনযাপন করতে মেনস্ট্রুয়াল কাপ এক নতুন বিপ্লব।এমনটাই মত স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের। সেই সঙ্গে পরিচ্ছন্নতাও বজায় থাকবে অনেক বেশি। পরিবেশবান্ধব তো বটেই। ফানেলের মতো দেখতে মুঠোবন্দি কাপ মানেই স্মার্ট ঋতুস্রাব।
বেশিরভাগ কর্মজীবী নারীরাই বাজারে প্রচলিত স্যানিটারি ন্যাপকিন থেকে সরে এসে অন্য কোন বিকল্প পদ্ধতি খুজছেন। তারা বলছেন, যেহেতু দিন দিন নারীদের কর্ম পরিসর আরও বড় হচ্ছে, তাই ঋতুকালীন ব্যবস্থাপনার জন্য দরকার স্বাস্থ্যসম্মত, টেকসই ও সূলভ মূল্যের উপকরণ।
মেনস্ট্রুয়াল কাপ
মেনস্ট্রুয়াল কাপের ধারনা

যদিও মেনস্ট্রুয়াল কাপের ধারনা নতুন নয়। ১৯৩৭ সালে বাজারে প্রথম ব্যবহার যোগ্য কাপ আসে। প্রথম দিকে শুধু রাবার দিয়ে বানানো হলেও পরবর্তীতে তা লেটেক্স রাবার, সিলিকন ও সর্বশেষ মেডিকেল গ্রেড সিলিকন দিয়ে তৈরী করা হচ্ছে।
মেনস্ট্রুয়াল কাপের ব্যবহার অনেক আগে থেকে হলেও৷ আমাদের দেশে এর ব্যবহার খুব বেশি দিনের না। স্যানিটারি ন্যাপকিনের ব্যবহার অনেকদিন ধরে হলেও এর ব্যবহার আমাদের জন্য কতটুকু স্বাস্থ্যকর বা ক্ষতিকর এ নিয়ে আমাদের দেশে তেমন কোন কার্যকরী গবেষণা হয় নি।
একটি বেসরকারি নারী স্বাস্থ্য ফোরামের রিপোর্ট অনুযায়ী বাজারে প্রচলিত স্যানিটারি ন্যাপকিন গুলোতে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ থাকে। একজন স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারকারীর ভাষ্যমতে, এতে যে আঠালো বা রাসায়নিক জেল দেয়া থাকে সেটা খুবই অস্বাস্থ্যকর এবং কিছু কিছু ব্র্যান্ডের ন্যাপকিনে উগ্র সুগন্ধি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
তবে সময়ের সাথে সাথে মহিলাদের চিন্তাধারার পরিবর্তন হচ্ছে। স্যানিটারি ন্যাপকিন এর ব্যবহার এখক অনেকটাই সেকেলে হয়ে গেছে। প্রথম দিকে সমাজের শিক্ষিত ও কর্মজীবী নারীরাই কেবল মেনস্ট্রুয়াল কাপ ব্যবহার করত। সময়ের সাথে সাথে সাধারণদের মাঝেও এর ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ব্যবহারকারীদের মতামত
মাইশা যিনি কিনা একজন পুলিশ কর্মকর্তা। পুলিশের চাকরি করায় প্রায় সারাদিনি তার বাহিরে থাকতে হয়। বিশেষ করে ঋতুকালীন সময়ে তাকে বেশি সমস্যায় পরতে হয়। তাই ভেবে চিন্তে তিনি মেনস্ট্রুয়াল কাপ ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেন। এবং ফলাফলটাও খুব শিগগিরই পেয়ে যান। একটানা ৮-১০ ঘন্টা এটা নিশ্চিন্তমনে ব্যবহার করা যায়। সাধারণ ন্যাপকিনের মত বার বার চেঞ্জ করার ঝামেলাও কম।
এছাড়াও, আফসারা নামে একজন চাকুরিজীবীর ভাষ্যমতে মেনস্ট্রুয়াল কাপের ব্যবহার তার জীবনযাত্রাকে আরো সহজ করে দিয়েছে। তিনি মেনস্ট্রুয়াল কাপ পরে ২০ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়েয়েছেন যেটা কিনা স্যানিটারি ন্যাপকিন পরে সম্ভব ছিল না।
তিনি আরও বলেন, আমি নিয়মিত ব্যায়াম, এমনকি পিরিয়ডের দিনে মেনস্ট্রুয়াল কাপ পরে সাঁতারও কেটেছি যেটা কিনা স্যানিটারি ন্যাপকিন পরে কল্পনাও করা যায় না।
আরেকজন কর্মজীবি মহিলার সাথে কথা বলে জানা যায়, এনজিও তে চাকরি করায় মাসে অনেকবার তাকে ঢাকার বাহিরে যেতে হয়। তিনি বলেন মেনস্ট্রুয়াল কাপ ভ্রমণে স্বাচ্ছন্দ্য দেয়। বিশেষ করে যারা বাইক বা সাইকেল চালায় তাদের জন্য মেনস্ট্রুয়াল কাপ রীতিমতো “ লাইফ সেভিং” প্রোডাক্ট।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেশির।ভাগ ব্যবহারকারী মেনস্ট্রুয়াল কাপের পক্ষে মতামত দিয়েছেন।
কেন ব্যবহার করবেন মেনস্ট্রুয়াল কাপ

যেখানে নরমাল স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করলে বার বার পরিবর্তন করতে হয়, কাপড়ে রক্ত লেগে যাওয়ার ভয় থেকে যায়, দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহার করা যায় না, এছাড়া অনেক সময় ধরে ব্যবহার করলে ঘামের সৃষ্টি হয়ে চুলকানি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
অপরদিকে মেনস্ট্রুয়াল কাপ ব্যবহার করলে আপনার এসব ঝামেলার মুখোমুখি হতে হবে না। এটা পরে গোসল করাও সম্ভব। মেনস্ট্রুয়াল কাপ রক্ত জমা করে রাখে অপরদিকে প্যাড রক্ত শুষে নেয়। তাই চাপ লাগলে বের হয়ে যাওয়ার ভয় থেকে যায়।
কিন্তু মেনস্ট্রুয়াল কাপের ব্যবহারে আপনি পাচ্ছেন পূর্ণ স্বাধীনতা। এটি স্মার্ট নারীদের স্মার্ট পছন্দ। এর ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি সকল সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পাবেন।
জুট ঝামেলা থকে মুক্তি পেতে তাই ব্যবহার করুন মেনস্ট্রুয়াল কাপ। আমাদের ওয়েবসাইটে খুব সহজেই পাবেন বিখ্যাত ব্র্যান্ডের মেনস্ট্রুয়াল কাপগুলো। তাই দেরি না করে আজই যোগাযোগ করুন আমাদের সাথে।